রবিবার, ৪ জুন ২০২৩সত্য ও সুন্দর আগামীর স্বপ্নে...

লক্ষ্মীপুরে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্থলে স্মৃতি ফলক করা হোক: মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির তোফায়েল

লক্ষ্মীপুরে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্থলে  স্মৃতি ফলক করা হোক: মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির তোফায়েল

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পৌর সভার ৬নং ওয়ার্ড মিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন করিব তোফায়েল। ১৯৪৭ সালে ৫ অক্টোবর পিতা বজলু রহমান ও মা ফাতেমা খাতুনের ঘর আলো করে জন্ম নেন এ বীর মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধু লক্ষ্মীপুরে মাদাম ব্রীজ সংলগ্ন যে স্থানে দাড়িয়ে জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন সেখানে একটি স্মৃতি ফলক স্থাপন করে সংরক্ষণ করতে হবে। এমনি আশাবাদ ব্যাক্ত করে একাত্তরের এ মুক্তিযোদ্ধা।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযোদ্ধের সময় তিনি ছিলেন ২৪ বছর টগবগে এক যুবক। ছাত্র জীবন থেকেই ছিলেন ছাত্রলীগের সমর্থক। ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলন এবং ৬৯’র গণ অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেন।

মুক্তিযোদ্ধা অংশ গ্রহণের প্রেক্ষাপট জানতে চাইলে এ মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পর থেকেই আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি গ্রহণ করি। পরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অতর্কিত হামলা করে। মজুপুরে পার্বতীপালসহ অনেককে হত্যা করে। তখন আমরা বুঝে ফেলি নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে হলে যুদ্ধের বিকল্প নাই। অধ্যক্ষ মনছুরুল হকের নেতৃত্বে আমি, বর্তমান পৌর মেয়র আবু তাহের, আনোয়ারুল হক, সালাহ উদ্দিন ভুঁইয়া, ওলি উল্লাহ, আনার উদ্দিনসহ ১৪ জনের একটি দল প্রশিক্ষনের জন্য ভারতে চলে যাই। সেখানে দুই মাস ট্রেনিং শেষ করে আমরা দেশে ফিরে আসি। সমিতির হাটে আমরা ক্যাম্প স্থাপন করি। সেখানে এডভোকেট আক্তারুজ্জানের নেতৃত্বে রফিকুল হায়দারসহ আমরা মীরগঞ্জ,পানপাড়া, কাজীর দিঘিরপাড়সহ বিভিন্নস্থানে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকারদের সাথে যুদ্ধ করি। লক্ষ্মীপুরের বাগবাড়ি ছিলো পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প। দিনের বেলায় আমরা নৌকা নিয়ে ঘুরতাম। নৌকার মাঝিরা জীবনবাজি রেখে আমাদেরকে নিয়ে ঘুরতো।

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার কারণে আমার পরিবারের উপরে বিভিন্ন সময়ে অত্যাচার নির্যাতন নেমে আসে। পরিবারের লোকজন বাড়িতে থাকতে পারতো না। আমাদের বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে লুকিয়ে থাকতো।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি আরো বলেন ভারতে প্রশিক্ষণের সময় আমাদের প্রায় সকলেরই চোখে অসুখ হয়। সবচেয়ে বেশি অসুস্থ হয় বর্তমান লক্ষ্মীপুরের পৌর মেয়র তাহের। সেখানে সে রক্ত আমসায় আক্রান্ত হয়। খালেদ মোহাম্মদ আলী তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

বর্তমান প্রজন্মের উদ্দেশ্যে এ মুক্তিযোদ্ধা বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এখন হিংসা বিদ্ধেষ ভুলে গিয়ে ছাত্র যুবক কৃষক শ্রমিক সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশটাকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে হবে। তবেই আমাদের স্বপ্ন স্বার্থক হবে।

হুমায়ুন কবির তোফায়েল লক্ষ্মীপুর সদর থানার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ৩ ছেলে ও এক মেয়ের জনক ।
  • Facebook
  • Twitter
  • LinkedIn
  • Print
Copy link
Powered by Social Snap