কাজল কায়েস : লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া গ্রামের সুমি আক্তার জন্ডিস আর পেটে ব্যথা নিয়ে এসেছেন জেলার সদর হাসপাতালে। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে সাতটি ওষুধ লিখেছেন। হাসপাতাল থেকে বিনা মূল্যে তিনটি ওষুধ পাওয়া গেছে। বাইরে থেকে ওষুধ কিনে নিতে হওয়ায় তাঁর আজ বাজার করা হবে না বলে জানান সুমি।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার আরব আলী সড়কের বাসিন্দা মো. শাহজাহান জানান, আম খেয়ে তিনি পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসক যেসব ওষুধ লিখেছেন, তার সব কটি হাসপাতালে নেই। এ জন্য বাধ্য হয়ে বাইরের দোকান থেকে কিনতে হয়েছে তাঁকে।
গতকাল বুধবার লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এ দুজন রোগীর সঙ্গে কথা বলা ছাড়াও হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোগীরা চাহিদামতো ওষুধ হাসপাতাল থেকে পাচ্ছে না। প্রতি অর্থবছরে এখানে প্রায় দেড় কোটি টাকার ওষুধ বরাদ্দ দেওয়া হয়। গড়ে রোগীপ্রতি বরাদ্দ ৮১ টাকারও কম।
দুপুরে সদর হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ সালে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বহির্বিভাগে এক লাখ ৬৬ হাজার ৫৩২ এবং জরুরি বিভাগে ১৩ হাজার ৬৫৬ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়েছে। ওই বছর মোট এক লাখ ৮০ হাজার ১৮৮ জন রোগী চিকিৎসা নেয়। এ ছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত (বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগ) এক লাখ ১৯ হাজার ৮১২ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র জানায়, সদর হাসপাতালে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক কোটি ৪৫ লাখ ৭২ হাজার ২২২ টাকার ওষুধ বরাদ্দ দেওয়া হয়। সে হিসাবে প্রত্যেক রোগী গড়ে ৮০ টাকা ৮৭ পয়সার ওষুধ পায়।
ওই কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ওষুধ এখনো আসেনি।
১০০ শয্যার হাসপাতালটির তিনজন চিকিৎসক ও দুজন সেবিকা জানান, প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৬০০ থেকে ৮০০ রোগী চিকিৎসা নেয়। ভর্তি হওয়া ও বহির্বিভাগে আসা রোগীর তুলনায় সরকারি ওষুধ বরাদ্দ অপ্রতুল। এ জন্য অ্যান্টাসিড, হিস্টাসিন, স্যালবিউটামিন, ক্যালসিয়াম ল্যাকটেট ও প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এ নিয়ে হিমশিম খেতে হয় তাঁদের। বহির্বিভাগে রোগীদের দুই-তিন দিনের পরিমাণমতো ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, মানুষ বেশি অসুস্থ হলেও হাসপাতালে যেতে চায় না। তারা চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে গিয়ে দেখায়। এ সময় দোকান থেকে ওষুধ কিনে নেয়। হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক পাওয়া যায় না, চিকিৎসক পেলে ওষুধ মেলে না। বিড়ম্বনা এড়াতে রোগীরা তাই হাসপাতালমুখী হয় না। কিন্তু গরিব রোগীর পক্ষে তো বাইরে থেকে ওষুধ কেনা সম্ভব হয় না।
সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সভাপতি মাহবুব মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাও সরকারের দায়িত্ব। হাসপাতালে রোগীরা যায় কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়ার জন্য। সরকার ও চিকিৎসকদের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। ’
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালে রোগীদের প্রায় ৭০ প্রকারের ওষুধ বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। ওষুধের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কুকুরের কামড়ের রোগীর জন্য মাসে ৫০টি ভ্যাকসিন বরাদ্দ হলেও তা অপ্রতুল। এ ছাড়া এখানে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও জেলা সিভিল সার্জন মোস্তফা খালেদ বলেন, বরাদ্দ পাওয়া ওষুধ রোগীদের দেওয়া হয়। সীমাবদ্ধতার কারণে রোগীদের চাহিদামতো ওষুধ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য চিঠি লেখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সদর হাসপাতালটি ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয় ২০০৩ সালের ৪ জুন। অথচ প্রয়োজনীয় চিকিৎসক-সেবিকাসহ জনবল ও সরঞ্জাম নেই। এ ছাড়া গত ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লক্ষ্মীপুরে এসে ২৫০ শয্যা হিসেবে সদর হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার আরব আলী সড়কের বাসিন্দা মো. শাহজাহান জানান, আম খেয়ে তিনি পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসক যেসব ওষুধ লিখেছেন, তার সব কটি হাসপাতালে নেই। এ জন্য বাধ্য হয়ে বাইরের দোকান থেকে কিনতে হয়েছে তাঁকে।
গতকাল বুধবার লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এ দুজন রোগীর সঙ্গে কথা বলা ছাড়াও হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোগীরা চাহিদামতো ওষুধ হাসপাতাল থেকে পাচ্ছে না। প্রতি অর্থবছরে এখানে প্রায় দেড় কোটি টাকার ওষুধ বরাদ্দ দেওয়া হয়। গড়ে রোগীপ্রতি বরাদ্দ ৮১ টাকারও কম।
দুপুরে সদর হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ সালে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বহির্বিভাগে এক লাখ ৬৬ হাজার ৫৩২ এবং জরুরি বিভাগে ১৩ হাজার ৬৫৬ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়েছে। ওই বছর মোট এক লাখ ৮০ হাজার ১৮৮ জন রোগী চিকিৎসা নেয়। এ ছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত (বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগ) এক লাখ ১৯ হাজার ৮১২ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র জানায়, সদর হাসপাতালে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক কোটি ৪৫ লাখ ৭২ হাজার ২২২ টাকার ওষুধ বরাদ্দ দেওয়া হয়। সে হিসাবে প্রত্যেক রোগী গড়ে ৮০ টাকা ৮৭ পয়সার ওষুধ পায়।
ওই কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ওষুধ এখনো আসেনি।
১০০ শয্যার হাসপাতালটির তিনজন চিকিৎসক ও দুজন সেবিকা জানান, প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৬০০ থেকে ৮০০ রোগী চিকিৎসা নেয়। ভর্তি হওয়া ও বহির্বিভাগে আসা রোগীর তুলনায় সরকারি ওষুধ বরাদ্দ অপ্রতুল। এ জন্য অ্যান্টাসিড, হিস্টাসিন, স্যালবিউটামিন, ক্যালসিয়াম ল্যাকটেট ও প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এ নিয়ে হিমশিম খেতে হয় তাঁদের। বহির্বিভাগে রোগীদের দুই-তিন দিনের পরিমাণমতো ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, মানুষ বেশি অসুস্থ হলেও হাসপাতালে যেতে চায় না। তারা চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে গিয়ে দেখায়। এ সময় দোকান থেকে ওষুধ কিনে নেয়। হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক পাওয়া যায় না, চিকিৎসক পেলে ওষুধ মেলে না। বিড়ম্বনা এড়াতে রোগীরা তাই হাসপাতালমুখী হয় না। কিন্তু গরিব রোগীর পক্ষে তো বাইরে থেকে ওষুধ কেনা সম্ভব হয় না।
সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সভাপতি মাহবুব মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাও সরকারের দায়িত্ব। হাসপাতালে রোগীরা যায় কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়ার জন্য। সরকার ও চিকিৎসকদের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। ’
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালে রোগীদের প্রায় ৭০ প্রকারের ওষুধ বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। ওষুধের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কুকুরের কামড়ের রোগীর জন্য মাসে ৫০টি ভ্যাকসিন বরাদ্দ হলেও তা অপ্রতুল। এ ছাড়া এখানে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও জেলা সিভিল সার্জন মোস্তফা খালেদ বলেন, বরাদ্দ পাওয়া ওষুধ রোগীদের দেওয়া হয়। সীমাবদ্ধতার কারণে রোগীদের চাহিদামতো ওষুধ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য চিঠি লেখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সদর হাসপাতালটি ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয় ২০০৩ সালের ৪ জুন। অথচ প্রয়োজনীয় চিকিৎসক-সেবিকাসহ জনবল ও সরঞ্জাম নেই। এ ছাড়া গত ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লক্ষ্মীপুরে এসে ২৫০ শয্যা হিসেবে সদর হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।