সাজ্জাদুর রহমান : লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরে মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে আছে। উদ্বোধনের পর তিন মাসেরও বেশি সময় পার হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। থেমে আছে প্রকল্পের কাজ। ঘটনাস্থলে নেই শ্রমিক ও নির্মাণ সামগ্রী। চোখে পড়েনি কোনো কর্মযজ্ঞ। এদিকে ধেয়ে আসছে মেঘনা। বর্ষার আগে বাঁধ নির্মাণের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলে বিস্তীর্ণ জনপদ বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভাঙন রোধে দ্রুত নদীর তীর সংরক্ষণে বাঁধ নির্মাণের দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জুন মাসে ‘লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বড়খেরী ও লুধুয়াবাজার এবং কাদিরপন্ডিতেরহাট এলাকা ভাঙন হতে রক্ষাকল্পে মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন হয়। ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮৯ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। একই বছরের আগস্ট মাসে প্রকল্পের টেন্ডার হয়। দ্রুত বাস্তবায়নে পুরো কাজ ৯৯ প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। উদ্বোধনের পর সামান্য কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিং করার পর কাজ বন্ধ রয়েছে। নেই কাজের কোনো অগ্রগতি।
সরেজমিন উপজেলার সাহেবেরহাট, কালকিনি, ফলকন ও পাটারিরহাট ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও কোনো কাজ চলে না। পাওয়া যায়নি ঠিকাদারের কোনো লোকজন। এদিকে অব্যাহতভাবে নদী ভাঙছে। বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, রাস্তাঘাট, হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলি জমিসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।
জানা গেছে, ঠিকাদার স্থানীয় কিছু দালালের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করে। এখন তাদের মধ্যে দরদাম নিয়ে ঝামেলা দেখা দেয়। যে কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। এদিকে, জিও ব্যাগ ডাম্পিংসহ নদীর তীর রক্ষা বাঁধের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে এলাকা। সব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে শত শত পরিবার। স্থানীয়রা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে বলেন, বসতভিটা রক্ষায় বর্ষার আগে বাঁধ নির্মাণ কাজ করতে হবে। বিলম্ব না করে যথাসময়ে মজবুত এবং ঠেকসই বাঁধ নির্মাণ চান তারা।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বলেন, ঠিকাদার চাঁদপুর থেকে বালু এনে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ করত। কিন্তু সেখানে বালু সংকটের কারণ দেখিয়ে তারা সাময়িক কাজ বন্ধ রেখেছে। তবে তারা কোন জায়গা থেকে বালু সংগ্রহ করবে সেটা তাদের বিষয়। আমরা ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছি, তারা যেন কাজ বন্ধ না রেখে কাজ চালিয়ে যায়। আশা করি আগামী ৫-৭ দিনের মধ্যে তারা কাজ শুরু করবে।
প্রকল্পের কাজ বন্ধ, মেঘনায় বিলীন হচ্ছে বিস্তীর্ণ জনপদ
