রাসেদ হাসান চৌধুরী, তুরস্কের আংকারা থেকে : আংকারা ইলদিরিম বেয়াজিদ ইউনিভার্সিটি, ইনষ্টিটিউট অব এশিয়ান সিকিউরিটি ষ্টাডিজ এবং একাডেমিক এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (৭ই ডিসেম্বর) তুরস্কের রাজধানী আংকারায়- আরাকান ট্রাজেডী, সমস্যা সমাধান ও করণীয় শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
আংকারা ইলদিরিম বেয়াজিদ ইউনিভার্সিটির সেমিনার রুমে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. কুদরত বুলবুলের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন আংকারা ইলদিরিম বেয়াজিদ ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মেতিন দোয়ান, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাননীয় সচিব উমিত ইয়ারদম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দি ইউরোপিয়ান রোহিঙ্গা কাউন্সিল চেয়্যারম্যান ড. জো কিউয়া (খুবাইব), আংকারা ইলদিরিম বেয়াজিদ ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক ও ইনষ্টিটিউট অব এশিয়ান সিকিউরিটি ষ্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজমুল ইসলামের বক্তব্যের মাধ্যমে সেমিনার উদ্বোধন করা হয়। এসময় তার্কিশ ন্যাশনাল পুলিশ একাডেমীতে অধ্যয়নরত স্নাতকোত্তর গবেষক এবং ইনষ্টিটিউট অব এশিয়ান সিকিউরিটি ষ্টাডিজ এর রিসার্চ ফেলো সাব্বির হাসান আরাকান ট্রাজেডী শীর্ষক ডকুমেন্টারীর মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সর্বশেষ অবস্থা ও বাংলাদেশের অবদান তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি ভাইস চ্যান্সেলর ড.মেতিন দোয়ান বলেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রোহিঙ্গা সমস্যা অন্যতম গূরুত্বপূর্ন একটি ইস্যু। আশার দিক হচ্ছে, রোহিঙ্গাদের পাশে বাস্তবিক ও প্রায়োগিক অর্থে দাড়ানো বাংলাদেশ ও তুরস্কের তরুণ গবেষকরা যখন সমস্যা সমাধানে একসাথে কাজ শুরু করেছে, তখন গুণগত ও মানগত সমাধানের আশা করা যায়। আজকের এই যৌথ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাননীয় সচিব উমিত ইয়ারদম তার বক্তব্যে প্রথমেই আরাকান অঞ্চলের সংকট এর ওপর এ সংকট সংশ্লিষ্ট নীতিগত বিষয়াবলী, আন্তর্জাতিক অবস্থানের উপর গবেষনার শূন্যতা তুলে ধরে, সেমিনারে আগত ছাত্র-ছাত্রীদের বিষয়ে গবেষনা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।
ইয়ারদম ২৫শে আগষ্ট গণহত্যার পরবর্তী সময়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আবাসন সুবিধা প্রদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমমনা দেশগুলোর বাংলাদেশের সাথে একসাথে কাজ করার মাধ্যমে আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন মোড় তৈরী করা যেতে পারে।
উমিত ইয়ারদম আরো বলেন, তুরস্ক আরাকান ইস্যুতে তার ডিপ্লোম্যাটিক কার্যকলাপ অতীতের মতো ধারাবাহিক ভাবে করে যাবে। এছাড়া তুর্কীশ আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা "আফাদ" ও "টিকা" এর মাধ্যমে আরাকানের নির্যাতিত মানুষের পাশে সবসময় কাজ করে যাবে।
বিশেষ অতিথি এর বক্তব্যে দি ইউরোপিয়ান রোহিঙ্গা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. জো কিউয়া (খুবাইব) আরাকানের সর্বশেষ নৃশংতার কথা উল্লেখ করে, বাংলাদেশে ও তুরস্কের যৌথ সহযোগীতার জন্য কৃত্জ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, উন্নত বিশ্বগুলো যখন মানবাধিকারের কথা বলে যাচ্ছে, তখন আরাকানের ঘটে যাওয়া গণহত্যার ব্যাপারে তাদের নিস্তব্ধতা সত্যিই দূ:খজনক।সবশেষে,সেমিনারের সঞ্চালক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. কুদরত বুলবুল তার সমাপনী বক্তব্যে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রোহিঙ্গা ইস্যুর গূরু্ত্ব তুলে ধরেন এবং এই বিষয়ে কাজ করার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের আহবান জানান। সেই সাথে আন্তর্জাতিক গণহত্যা সহ নানাবিধ ইস্যুতে কাজ করার জন্য উভয় দেশের গবেষকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সেমিনারের সমাপনী ঘোষনা করেন।