নিজস্ব প্রতিবেদক :
লক্ষ্মীপুরে গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতির সভাপতি এ কে এম মাহমুদ রিয়াজের বিরুদ্ধে সদস্যদের প্রশিক্ষণের নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। সদস্যদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা উত্তোলন করে তার পকেট ভারি করার অভিযোগে ক্ষুদ্ধ অনেকেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে সমিতির সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ২১ দিনের রিফ্রেসার প্রশিক্ষণ শেষে ঢাকা থেকে সনদপত্র সরবরাহ করার কথা। কিন্তু লক্ষ্মীপুরে সনদ তৈরী করে দেওয়া হচ্ছে। নিয়ম বহির্ভুতভাবে এ প্রতারণা করায় অসন্তোষ বিরাজ করছে সমিতির সদস্যদের মাঝে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশ গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতির (রেজিঃ এস-১৩৬১) লক্ষ্মীপুর শাখার কার্যক্রম শুরু হয় ২০১০ সালে। সবশেষ ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই এ কে এম রিয়াজ মাহমুদকে সভাপতি ও বিধান কৃঞ্চ দাসকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্য কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। সমিতির নিয়ম রয়েছে, যারা গ্রামে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন এবং গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতির সদস্য শুধু তারা প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারবেন। কিন্তু সমিতিটি লক্ষ্মীপুরে এ নিয়ম মানছেন না। সমিতির সভাপতি মাহমুদ রিয়াজ সহযোগী উত্তম কুমার সরকারের মাধ্যমে নতুনদের কাছ থেকে ৮ হাজার ২শ টাকা নিয়ে গ্রাম ডাক্তার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। তাদের অনেকেই গ্রাম্য ডাক্তার নন বলে জানা গেছে। সমিতির কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় না করেই প্রশিক্ষণের আয়োজন করে পকেট ভারি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই।
গত ১৫ জানুয়ারি থেকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ৩য় ব্যাচের ২১ দিন ব্যাপী এ প্রশিক্ষণ চলছে। এছাড়া একই দিন থেকে কমলনগর উপজেলার ২য় ব্যাচের প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করা হয়েছে। অবশ্য এসব প্রশিক্ষণের বিষয়ে সমিতির কেন্দ্রীয় নেতারা অবগত নয়।
ভবানীগঞ্জ ওষুধ ফার্মেসীর মালিক ও প্রশিক্ষণ গ্রহনকারী মো. ধিরোজ জানান, তিনি ২য় ব্যাচে সদর উপজেলায় ২১দিন ব্যাপি প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছেন। তবে তিনি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য হয়নি। একটি প্রশিক্ষণের সনদ দেওয়া হয়েছে তাও লক্ষ্মীপুরে তৈরি করা।
জানা গেছে, প্রতি প্রশিক্ষনার্থীর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ ফি বাবত ৮ হাজার ২শ টাকা নেওয়া হচ্ছে। প্রতি ব্যাচে অন্তত ৪০ জন গ্রাম ডাক্তার থাকেন। প্রশিক্ষণ শেষে কেন্দ্র থেকে সনদপত্র দেওয়ার কথা থাকলেও সে সনদপত্র দেওয়া হচ্ছে লক্ষ্মীপুর থেকে। অভিযোগে রয়েছে, কেন্দ্রীয় কমিটিকে দেওয়ার নামে রিয়াজ উদ্দিন মাহমুদ সদস্যদের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটি টাকার বিষয়টি অবগত নয় বলে জানান।
এ ব্যাপারে সমিতির জেলা সভাপতি এ কে এম রিয়াজ উদ্দিন মাহমুদ জানান, উত্তোলন করা টাকা প্রশিক্ষণে ডাক্তারদের সম্মানিসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় করেছি। কেন্দ্রের অনুমতি নিয়েই প্রশিক্ষণ করছি, কেউ অস্বীকার করলে কী করবো ?
বাংলাদেশ গ্রাম-ডাক্তার কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার জানান, প্রশিক্ষণের সনদপত্র কেন্দ্র থেকে দেওয়ার কথা থাকলেও লক্ষ্মীপুর কমিটি তা নেয়নি। নিয়ম না মেনে লক্ষ্মীপুরে প্রশিক্ষণ দেওয়ায় লক্ষ্মীপুর কমিটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টাকার বিষয়ে আমরা অবগত নয়।
সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব আবু ইউসুফ খাঁন বাদল জানান, প্রশিক্ষণ গ্রহন করতে হলে আগে কেন্দ্র থেকে সদস্যপদ গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু লক্ষ্মীপুরে সদস্যপদ ছাড়াই কিভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে - তা খোঁজ নেওয়া হবে।
গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতি : লক্ষ্মীপুরে প্রশিক্ষণের নামে প্রতারণার অভিযোগ
