নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদে অনিয়মের মধ্য দিয়ে চেয়ারম্যান বাবা তার মেম্বার ছেলেকে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচন করার অভিযোগ উঠেছে।
পরিষদের সকলের মতামতের ভিত্তিতে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার কথা থাকলে ছেলেকে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা. খালেদ সাইফুল্লাহ নির্বাচিত সকল ইউপি সদস্যদের নিজের স্বাক্ষরিত টোকেন ব্যালট ধরিয়ে দেন। নিরুপায় হয়ে নারী সদস্যসহ সাতজন সদস্য ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য চেয়ারম্যানের ছেলে মো. নুরুল্লাহকে সমর্থন দিতে বাধ্য হন। বাকি ৪জন সদস্য ওই টোকেন ব্যালটে কাউকে সমর্থন দেননি। বৃহস্পতিবার দুপুর বিষয়টি প্রকাশ হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। এতে অনেকেই বিরুপ মন্তব্য প্রকাশ করেন।
জানা যায়, জানা যায়, গত ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ নির্বাচিত হন। একই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড হতে তার ছেলে মো. নুরুল্লাহ ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। গত ২৯ নভেম্বর তার নামে গেজেট প্রকাশিত হয়। শপথের পর চেয়ারম্যান প্যানেল চেয়ারম্যান করার জন্য নিজ স্বাক্ষরিত টোকেন ব্যালট তৈরী করে সকল সদস্যদের বিতরণ করেন। ওই টোকেনে প্যানেল ১, প্যালেন ২ ও প্যালেন ৩ লিখে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য অন্যান্য সদস্যদের প্রস্তাব করেন। ভিতরে ভিতরে তার ছেলেকে প্যানেল ১ করার জন্য সদস্যদের চাপ প্রয়োগ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন (ইউপি) সদস্য বলেন, চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে উন্নয়নের স্বার্থে তার ছেলেকে প্যানেল চেয়ারম্যান প্রস্তাব করার জন্য বলেন। নিরুপায় হয়ে আমরা চেয়ারম্যানের ছেলেকে প্যানেল ১ লিখতে বাধ্য হই।
ওই ইউনিয়নের টানা ৬ বার নির্বাচিত ৭ নম্বর ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য হারুনুর রশিদ জিন্নাহ ভূঁইয়া ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফজলে এলাহী শামিম বলেন, প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনে সভায় সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা। কিন্তু চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ কোন সভা না করে নিজের অপকর্ম ঢাকতে নতুন কৌশলে ছেলেকে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করতে বাধ্য করেন।
চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, সকল সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হয়েছে। এখানে কোন অনিয়ম হয়েছে বলে আমার মনে হয়না।
প্রসঙ্গত, গত১১ নভেম্বর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ফলাফল বাতিল চেয়ে মামলা করেছেন পরাজিত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আশ্রাফ উদ্দিন রাজন রাজু।
মামলায় বিজয়ী প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহসহ প্রতিদ্বন্দ্বী ৬ প্রার্থীকে বিবাদী করা হয়। নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল মামলাটি আমলে নিয়ে গত সোমবার ৬ প্রার্থীকে কারণ দর্শাণোর নোটিশ করেন। এর আগে ২ জানুয়ারি বিদ্রোহী প্রার্থী রাজু ফলাফল বাতিল চেয়ে লক্ষ্মীপুর জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালত ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন।
কমলনগরে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনে অনিয়ম
