নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলা ভাষা। বাঙ্গালী জাতির মাতৃভষা। এই ভাষাটি রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। ভাষাটি অর্জন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন কয়েকজন তরুণ। তাই এই দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আবার পরবর্তীতে ভাষাটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালন করছেন বাঙ্গালী জাতি।
বিশে^র সর্বাধিক প্রচলিত ভাষাগুলির মধ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে এই ভাষা। দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ২২ কোটি মানুষের মুখের ভাষা বাংলা। পৃথিবীর মোট ৩০ কোটি মানুষ এই ভাষায় কথা বলে। এই মানুষগুলো মধুর সুরে জন্মদাত্রী মাকে ডাকতে পারে। মায়ের মুখ থেকে প্রথম শেখা বাক্যটি হয়ে উঠে একটি শিশুর সারাজীবনের ভাষা। আর সে ভাষার মাধ্যমেই মাকে মনে রাখে সারাটি জীবন।
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি যে চেতনায় উদ্দীপিত হয়ে বাঙালিরা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। আজ তা দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জনগণের জন্য গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও সুপরিচিত। বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮) বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে কয়েকজন তরুণ শহীদ হন। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। পরে ২০১০ খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়।
উইকিপিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, কানাডার ভ্যানকুভার শহরে বসবাস করতো দুই বাঙ্গালী রফিকুল ইসলাম এবং আবদুস সালাম। প্রাথমিক উদ্যোক্তা হিসেবে তারা একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে।
১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্য দেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। ‘২০১০ সালের ২১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে এখন থেকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে জাতিসংঘ’। - এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয়েছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে উত্থাপন করে বাংলাদেশ।
পরে ২০১১ সালের মে মাসে ১১৩ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের তথ্যবিষয়ক কমিটিতে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাস হয়।
মায়ের ভাষায় মাকে মনে রাখা
